ব্যাংকিং খাতে কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে কীভাবে ঋণ দেওয়া হয়েছে, কার কাছে কত টাকা আটকে আছে এবং এসব ঋণের পেছনে কী ধরনের অনিয়ম ঘটেছে এসব জানতে একটি ট্রুথ অ্যান্ড রিকনসিলিয়েশন কমিশন গঠনের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী।
বৃহস্পতিবার পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট (পিআরআই) আয়োজিত ‘ব্যাংকের ব্যর্থতা ও রেজুলেশন: উদ্যোগ ও চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ প্রস্তাব দেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পিআরআই চেয়ারম্যান জায়েদি সাত্তার।
লুৎফে সিদ্দিকী বলেন, শুধুমাত্র নীতি বা আইন পরিবর্তন করলেই সমস্যার সমাধান হবে না; বরং খাতভিত্তিক একটি শ্রেণিবিন্যাস তৈরি করে মূল সমস্যাগুলো চিহ্নিত করতে হবে। তিনি মনে করেন, ক্ষুদ্র পর্যায়ের আচরণগত পরিবর্তন ছাড়া অতীতের ভুলের পুনরাবৃত্তি ঠেকানো সম্ভব নয়।
গোলটেবিল আলোচনায় প্রাইম ব্যাংকের চেয়ারম্যান তানজীল চৌধুরী বলেন, ইচ্ছাকৃত খেলাপিদের ব্যাংকিং ব্যবস্থায় ফেরার কোনো সুযোগ দেওয়া যায় না। তাদের নতুন করে ঋণ সুবিধা না দেওয়ার পাশাপাশি ব্যাংকপরিচালক হতে পরিবারের শেয়ার মালিকানার সীমা নির্ধারণের ওপর তিনি জোর দেন। একই সঙ্গে ব্যাংক ও শেয়ারবাজার উভয় খাতেই সুস্থ বিকাশ নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয়তার কথাও তুলে ধরেন তিনি।
অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) চেয়ারম্যান মাসরুর আরেফিন বলেন, দেশের প্রেক্ষাপটে কোনো ব্যাংককে ধ্বংসের পথে যেতে দেওয়া উচিত নয়। পাঁচটি ব্যাংক একীভূত করার উদ্যোগকে তিনি সময়োপযোগী বলে উল্লেখ করেন। তার মতে, অর্থনীতি সম্প্রসারিত হচ্ছে, ফলে নতুন ও শক্তিশালী ব্যাংকের প্রয়োজন রয়েছে। তিনি আরও বলেন, অতীতে যেসব ব্যাংক দুর্বল অবস্থায় ছিল, সেগুলো এখন শক্তিশালী ব্যাংকে পরিণত হয়েছে সিটি ব্যাংক তার একটি উদাহরণ।
ব্র্যাক ব্যাংকের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক আহমেদ রশিদ বলেন, ব্যাংক একীভূতকরণ সফল হবে কিনা তা অনেকটাই নির্ভর করবে গ্রাহকদের টাকা ফেরতের প্রস্তাবে কী থাকে তার ওপর। কত অংশ গ্রাহক পাওয়া অর্থ ফেরত পাবেন এবং কত অংশ শেয়ার হিসেবে পাবেন এ বিষয়ে পরিষ্কার নির্দেশনা থাকা জরুরি বলে মন্তব্য করেন তিনি।





