জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত উৎপাদন ও সেবা খাতের অধিকাংশ কোম্পানি প্রত্যাশিত ব্যবসায়িক সাফল্য দেখাতে পারেনি। মুনাফা কমা, লোকসান এবং নির্ধারিত সময়ে আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ না করার প্রবণতা খাতটির দুর্বল অবস্থানই তুলে ধরছে। বড় কোম্পানি তুলনামূলক ভালো করলেও ছোট প্রতিষ্ঠানগুলো চাপের মুখে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত ব্যাংক, বীমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বাদে উৎপাদন ও সেবা খাতের ২৪৩টি কোম্পানির প্রথম প্রান্তিকের (জুলাই-সেপ্টেম্বর) শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) পর্যালোচনায় দেখা গেছে, বড় অংশের ব্যবসায়িক অবস্থান দুর্বল।
এই কোম্পানিগুলোর মধ্যে ১৬৬টির মুনাফা কমেছে, লোকসান হয়েছে অথবা তারা সময়মতো আর্থিক তথ্য প্রকাশ করেনি। বিপরীতে, ১২১টি কোম্পানি মুনাফায় থাকলেও, এর মধ্যে ২৭টির মুনাফা এক কোটি টাকার নিচে।
মুনাফায় থাকা ১২১টি কোম্পানি সম্মিলিতভাবে প্রায় ৪ হাজার ৮৪৩ কোটি টাকা নিট মুনাফা করেছে। তবে এই মুনাফার বড় অংশই এসেছে হাতে গোনা কয়েকটি প্রতিষ্ঠান থেকে।
১০০ কোটি টাকার বেশি মুনাফা করা ১১টি কোম্পানির দখলে মোট মুনাফার প্রায় ৭২ শতাংশ।
যেসব কোম্পানির মুনাফা উল্লেখযোগ্য
চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে শত কোটি টাকার বেশি মুনাফা করেছে- গ্রামীণফোন, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস, পাওয়ার গ্রিড, বিএটি বাংলাদেশ, ওয়ালটন, রবি, পদ্মা অয়েল, মেঘনা পেট্রোলিয়াম, ম্যারিকো বাংলাদেশ, যমুনা অয়েল, বিএসআরএম লিমিটেড ও লাফার্জ-হোলসিম।
লোকসান থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর উদাহরণ
গত বছর লোকসানে থাকা বেশ কয়েকটি কোম্পানি এবার মুনাফায় ফিরেছে। এর মধ্যে রয়েছে পাওয়ার গ্রিড, ডেসকো, রানার অটোমোবাইলস, এসিআই লিমিটেড ও আরএকে সিরামিক। একই ধারা দেখা গেছে ইফাদ অটোস, আনোয়ার গ্যালভানাইজিং ও বারাকা পাওয়ারের ক্ষেত্রেও।
ইপিএস: কার আয় সবচেয়ে বেশি
প্রান্তিক হিসাবে সর্বোচ্চ ইপিএস অর্জন করেছে রেকিট বেনকিজার (৫২.২২ টাকা)। এর পরেই রয়েছে ম্যারিকো, পদ্মা অয়েল, মেঘনা পেট্রোলিয়াম, যমুনা অয়েল, স্কয়ার ফার্মা ও ওয়ালটনের মতো কোম্পানিগুলো।
যাদের লোকসান সবচেয়ে বেশি
অন্যদিকে, শেয়ারপ্রতি আয়ে বড় লোকসানে থাকা কোম্পানির তালিকায় শীর্ষে রয়েছে জিল বাংলা সুগার ও মেঘনা সিমেন্ট। এ ছাড়া বাটা সু, বসুন্ধরা পেপার, সিঙ্গার ও তিতাস গ্যাসের ইপিএসও নেতিবাচক।
সংশ্লিষ্টদের মতে, অর্থনীতি ধীরে ধীরে ঘুরে দাঁড়ালেও তার সুফল সব কোম্পানির ক্ষেত্রে সমানভাবে আসেনি। বড় প্রতিষ্ঠানগুলো তুলনামূলক দ্রুত স্বাভাবিক ব্যবসায় ফিরলেও ছোট কোম্পানিগুলো উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধি ও বাজার হারানোর আশঙ্কায় মূল্য সমন্বয় করতে পারছে না। শক্তিশালী করপোরেট কাঠামো, ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা ও দক্ষ জনবলই বড় কোম্পানিগুলোকে দীর্ঘমেয়াদে এগিয়ে রাখছে।





