দেশে বৈধভাবে আমদানিকৃত স্মার্টফোনের দাম কমানো ও বাজারে চোরাচালান রোধে আমদানি শুল্ক হ্রাসের নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। শুল্ক কমানোর পাশাপাশি স্থানীয় মোবাইল কারখানাগুলোর সুরক্ষা, প্রবাসীদের জন্য নতুন ফোন আনার নিয়ম সহজ করা এবং এনইআইআর ব্যবস্থার মাধ্যমে ক্লোন-রিফারবিশড ফোন বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
বৈধভাবে আমদানিকৃত স্মার্টফোনের দাম কমাতে সরকার আমদানি শুল্ক হ্রাসের নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে। বর্তমানে প্রায় ৬১ শতাংশ শুল্ক দিতে হলেও তা উল্লেখযোগ্যভাবে কমানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সরকারের ধারণা, শুল্ক কমলে বৈধ ফোনের বাজার বিস্তৃত হবে এবং গ্রাহকরা কম দামে স্মার্টফোন কিনতে পারবেন।
১ ডিসেম্বর সচিবালয়ে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়বের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়। এনবিআর, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, বিটিআরসি এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের প্রতিনিধিরা সভায় অংশ নেন। পরে ৩ ডিসেম্বর এক সরকারি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিস্তারিত জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, শুধু আমদানি শুল্ক কমালেই হবে না দেশে থাকা ১৩-১৪টি মোবাইল কারখানাকে টিকিয়ে রাখতে তাদের শুল্ক ও ভ্যাটও সমন্বয় করতে হবে। তা না হলে বিদেশি বিনিয়োগ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ বিষয়ে এনবিআর ও বিটিআরসি যৌথভাবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কাজ শুরু করছে।
সরকার জানিয়েছে, যেসব প্রবাসীর বিএমইটি নিবন্ধন কার্ড আছে, তারা শুল্ক ছাড়া মোট তিনটি ফোন আনতে পারবেন। নিজের ব্যবহৃত একটি ও অতিরিক্ত দুইটি নতুন ফোন। তবে চতুর্থ ফোন আনলে নির্ধারিত শুল্ক দিতে হবে।
যাদের বিএমইটি কার্ড নেই, তারা নিজের ব্যবহৃত ফোনের সঙ্গে একটি নতুন ফোন শুল্কমুক্ত সুবিধায় আনতে পারবেন। পাশাপাশি চোরাচালান রোধে বিদেশ থেকে ফোন আনার সময় বৈধ ক্রয়রসিদ সঙ্গে রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
দেশে ফেরার পর প্রবাসীরা ৬০ দিন পর্যন্ত কোনো ধরনের নিবন্ধন ছাড়া স্মার্টফোন ব্যবহার করতে পারবেন; সময়সীমা অতিক্রম করলে ডিভাইসটি নিবন্ধন করতে হবে। ১৬ ডিসেম্বর থেকে ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্টার চালু হবে। এর ফলে চুরি, ছিনতাই, ক্লোন বা রিফারবিশড ফোন এবং ইলেকট্রনিক বর্জ্য হিসেবে আনা পুরোনো ডিভাইসের আমদানি পুরোপুরি নিষিদ্ধ হবে। ভারত, চীন ও থাইল্যান্ড থেকে আসা ফ্লাইটগুলোতে শিগগিরই কাস্টমসের বিশেষ অভিযান চালানো হবে বলে জানানো হয়।
১৬ ডিসেম্বরের আগে বাজারে থাকা যেসব অবৈধভাবে আমদানিকৃত ফোনের বৈধ আইএমইআই আছে, সেগুলো বিটিআরসিতে তালিকা দিলে কম শুল্কে বৈধ করার সুযোগ পাওয়া যাবে। তবে ক্লোন বা রিফারবিশড ফোনকে এই সুবিধা দেওয়া হবে না।
সরকার স্পষ্ট জানিয়েছে, বর্তমানে ব্যবহৃত কার্যকর কোনো মোবাইল ফোন ১৬ ডিসেম্বরের আগে নিষক্রিয় হবে না। গুজব ছড়ানো বা অযথা আতঙ্ক সৃষ্টি না করার আহ্বান জানানো হয়েছে। টেলিযোগাযোগ অধ্যাদেশ সংশোধনের মাধ্যমে সিম নিবন্ধন সংক্রান্ত তথ্য সুরক্ষায় আইনি নিরাপত্তা বাড়ানো হচ্ছে। যাতে অন্য কেউ ব্যবহারকারীর নামে নিবন্ধিত সিম ব্যবহার করে সাইবার অপরাধ বা মোবাইল ব্যাংকিং জালিয়াতিতে জড়াতে না পারে।





