- ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ছাড়াল ১ লাখ কোটি টাকা
- অর্ধেক ঋণ অনাদায়ী, প্রভিশন ঘাটতি বাড়ছে
ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির খেলাপি ঋণ এ বছরের সেপ্টেম্বর নাগাদ ১ লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। দীর্ঘদিনের অনিয়ম, ঋণ কেলেঙ্কারি ও এস আলম গ্রুপের জালিয়াতি একসময়কার সবচেয়ে লাভজনক ব্যাংকটিকে গভীর সংকটে ফেলেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, মোট ঋণের অর্ধেকেরও বেশি এখন অনাদায়ী, যা দেশের ব্যাংকিং খাতের জন্য বড় ঝুঁকি।
খেলাপি ঋণের ভয়াবহ চিত্র
সেপ্টেম্বর শেষে ইসলামী ব্যাংকের মোট ঋণ দাঁড়ায় ১ লাখ ৮১ হাজার ৮৬০ কোটি টাকা। এর মধ্যে ১ লাখ ৬ হাজার কোটি টাকা খেলাপি হয়ে গেছে। অর্থাৎ ব্যাংকের অর্ধেকেরও বেশি ঋণ এখন নন-পারফর্মিং লোন (এনপিএল)। মাত্র এক বছরে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৮৮ হাজার কোটি টাকা।
এস আলম গ্রুপের প্রভাব
২০১৭ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত এস আলম গ্রুপ ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণে থেকে প্রায় ৭০ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেয়। এর মধ্যে ৬৬ হাজার কোটি টাকার বেশি খেলাপি হয়েছে। গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল আলম ও কয়েকজন শীর্ষ কর্মকর্তা বর্তমানে পলাতক। বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, প্রক্সি কোম্পানির মাধ্যমে বিপুল ঋণ নেওয়া হয়েছিল।
অন্যান্য ঋণগ্রহীতা ও ঝুঁকিপূর্ণ ব্যাংকে অর্থ আটকে আছে
ইসলামী ব্যাংকের বড় ঋণগ্রহীতাদের মধ্যে রয়েছে- নাসা গ্রুপ, নোমান গ্রুপ, দেশবন্ধু গ্রুপ, বসুন্ধরা মাল্টিফুডসহ আরও কয়েকটি প্রতিষ্ঠান। পাশাপাশি পাঁচটি ঝুঁকিপূর্ণ ব্যাংকে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা আটকে আছে। জনতা ব্যাংকের কাছেও ১ হাজার কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে।
মামলা, পুনঃতফসিল ও পুনরুদ্ধার প্রচেষ্টা
ব্যাংকটি খেলাপিদের বিরুদ্ধে ৪৮৮টি মামলা করেছে। এর মধ্যে অর্থ ঋণ আদালতে দাবির পরিমাণ ৬৬ হাজার কোটি টাকা। ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ওমর ফারুক খান বি ২৪ নিউজকে জানিয়েছেন, নগদ অর্থ পুনরুদ্ধারই এখন প্রধান অগ্রাধিকার। প্রকৃত ব্যবসায়ীদের জন্য পুনঃতফসিলের সুযোগ রাখা হয়েছে। লক্ষ্য হলো খেলাপি ঋণের হার ৫০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩৫ শতাংশে আনা।
কর্মী ছাঁটাই ও পুনর্গঠন
এস আলম গ্রুপের সময়ে নিয়োগ পাওয়া প্রায় ৪ হাজার ৬৮৫ জন কর্মীকে বরখাস্ত করেছে ইসলামী ব্যাংক। অভিযোগ ছিল, এসব নিয়োগে স্বচ্ছতা ছিল না। পরে নতুন করে ২ হাজার ৫৭১ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। পুনর্গঠনের অংশ হিসেবে ব্যাংকটি ট্রেইনি অফিসার, নিরাপত্তাকর্মী ও মেসেঞ্জার নিয়োগ করেছে।





