রাহাত চাকরি পেয়েছে বছর খানেক হলো। হাতে কিছু সঞ্চয়ও জমেছে। এখন সে ভাবছে– শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করবে। কিন্তু শেয়ার বাজার শুনলেই তার মনে ভয়– ঝুঁকি বেশি, টাকা হারিয়ে যায়।
একদিন তার বন্ধু নাহিদ বলল, “তুই কি প্রেফারেন্স শেয়ার সম্পর্কে জানিস? এটা অনেকটা সিনেমার ভিআইপি টিকিটের মতো। আগে বসার সুযোগ, আগে সুবিধা।”
রাহাতের চোখ চকচক করে উঠল। সে জানতে চাইল, কীভাবে এই শেয়ার কাজ করে।
নাহিদ বুঝিয়ে দিল-কোম্পানি যখন লাভ করে, প্রথমেই প্রেফারেন্স শেয়ারহোল্ডারদের নির্দিষ্ট হারে ডিভিডেন্ড দেওয়া হয়। এরপর যা অবশিষ্ট থাকে, তা ইক্যুইটি শেয়ারহোল্ডারদের মধ্যে ভাগ হয়। কোম্পানি বন্ধ হলে সম্পদ বণ্টনের সময়ও প্রেফারেন্স শেয়ারহোল্ডাররা আগে টাকা ফেরত পান।
রাহাত ভাবল-এটা তো অনেকটা নিরাপদ আসন। ঝুঁকি কম, আয়ও স্থিতিশীল।
নাহিদ আরও বলল-প্রেফারেন্স শেয়ারেরও বিভিন্ন ধরন আছে। কিউমুলেটিভ শেয়ারে ডিভিডেন্ড জমা হয়ে পরে দেওয়া হয়। নন-কিউমুলেটিভে জমা হয় না, শুধু নির্দিষ্ট সময়ে দেওয়া হয়। কনভার্টেবল শেয়ার চাইলে ইকুইটি শেয়ারে রূপান্তর করা যায়। রিডিমেবল শেয়ার নির্দিষ্ট সময় শেষে কোম্পানি ফেরত নেয়। পারপেচুয়াল শেয়ারের কোনো মেয়াদ নেই।
রাহাতের মনে হলো-এগুলো যেন বিভিন্ন ধরনের টিকিট। কেউ ভিআইপি, কেউ সাধারণ, কেউ আবার কনভার্টেবল পাস।
রাহাত খুশি হয়ে বলল-প্রেফারেন্স শেয়ারে আগে ডিভিডেন্ড পাওয়ার নিশ্চয়তা আছে। আয় স্থিতিশীল। ঝুঁকি কম। কোম্পানি বন্ধ হলেও ফেরত পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
কিন্তু নাহিদ সতর্ক করল-ভোটাধিকার নেই। লাভ সীমিত। বাজারে সবসময় সহজে পাওয়া যায় না।
রাহাত বুঝল-এটা নিরাপদ হলেও সীমাবদ্ধতা আছে।
রাহাত একটি কোম্পানিতে বিনিয়োগ করল। কোম্পানি বছরে ১০ কোটি টাকা লাভ করল।
প্রথমে প্রেফারেন্স শেয়ারহোল্ডারদের নির্দিষ্ট হারে ডিভিডেন্ড দেওয়া হলো। এরপর অবশিষ্ট অর্থ ইক্যুইটি শেয়ারহোল্ডারদের মধ্যে ভাগ হলো।
রাহাত খুশি-সে নিয়মিত আয় পাচ্ছে, ঝুঁকিও কম। রাহাত বুঝল-নিরাপদ বিনিয়োগ চাইলে প্রেফারেন্স শেয়ার ভালো। বেশি লাভ চাইলে ইক্যুইটি শেয়ার উপযুক্ত। আর বিনিয়োগের আগে কোম্পানির আর্থিক অবস্থা যাচাই করা জরুরি।
অর্থাৎ প্রেফারেন্স শেয়ার হলো- বিনিয়োগকারীদের জন্য এক ধরনের ভিআইপি টিকিট। এটি নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা দেয়, তবে সীমাবদ্ধতাও রয়েছে। প্রেফারেন্স শেয়ার হলো অগ্রাধিকার, কিন্তু সীমিত লাভের বিনিয়োগ।





