প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিন জাতির উদ্দেশে ভাষণে ঘোষণা করেছেন, আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন–সংক্রান্ত গণভোট। সকাল সাড়ে সাতটা থেকে বিকেল সাড়ে চারটা পর্যন্ত টানা ভোট গ্রহণ চলবে। এই দুই ভোটকে ঘিরে ইসি সময় ব্যবস্থাপনা ও নিরাপত্তাকে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছে।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন জাতির উদ্দেশে আজ বৃহস্পতিবার ভাষণে এ তথ্য জানান। ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং জুলাই জাতীয় সনদের গণভোট একই দিনে অনুষ্ঠিত হবে। ভোট গ্রহণ শুরু হবে সকাল সাড়ে সাতটায় এবং চলবে বিকেল সাড়ে চারটা পর্যন্ত।
ভোটার সংখ্যা ও প্রবাসীদের অংশগ্রহণ
দেশে মোট ভোটার সংখ্যা ১২ কোটি ৭৬ লাখের বেশি। পাশাপাশি প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য প্রথমবারের মতো পোস্টাল ব্যালটে ভোট দেওয়ার সুযোগ রাখা হয়েছে। ইতিমধ্যে তিন লাখের বেশি প্রবাসী ভোটার নিবন্ধন সম্পন্ন করেছেন।
অন্তর্বর্তী সরকারের ১৬ মাস পর নির্বাচন
গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ৮ আগস্ট শপথ নেয় অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার। সেই সরকারের দায়িত্ব নেওয়ার ১৬ মাসের মাথায় নির্বাচন তফসিল ঘোষণা করল ইসি।
প্রথমে বিএনপিসহ বিভিন্ন দল নির্বাচন দ্রুত করার দাবি জানালেও পরে সরকার ও বিএনপির মধ্যে আলোচনার ভিত্তিতে ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে ভোটের বিষয়ে মতৈক্য হয়। এরপর থেকেই সরকার ঘোষণা দেয় ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধেই নির্বাচন হবে, যা আজ তফসিল ঘোষণার মাধ্যমে আনুষ্ঠানিক হলো।
কোন দলগুলো অংশ নিতে পারবে
ইসিতে বর্তমানে নিবন্ধিত দল রয়েছে ৫৬টি। নিবন্ধন স্থগিত থাকায় আওয়ামী লীগ নির্বাচন করতে পারবে না। তবে অন্যান্য নিবন্ধিত দলগুলো দলীয় প্রতীকে অংশ নিতে পারবে। এছাড়া যে কোনো যোগ্য ব্যক্তি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন।
নতুন নির্বাচন কমিশনের প্রথম পরীক্ষা
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর নতুন ইসির নেতৃত্ব গ্রহণ করেন এ এম এম নাসির উদ্দীন। এবার জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট একই দিনে হওয়ায় সময় ব্যবস্থাপনা, ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়া এবং নিরাপত্তা সবকিছুই ইসির সামনে বড় পরীক্ষা হিসেবে দেখা হচ্ছে।
ভোটারদের সুবিধা বিবেচনায় এবার এক ঘণ্টা বাড়ানো হয়েছে ভোট গ্রহণের সময়। পাশাপাশি ভোটকেন্দ্রে গোপন কক্ষের সংখ্যাও বাড়ানো হচ্ছে, যাতে ভোটারদের চাপ সহজে সামলানো যায়।
নজিরবিহীন নিরাপত্তা ব্যবস্থা
নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করছে ইসি। ইতিমধ্যে সরকার জানিয়েছে সশস্ত্র বাহিনীসহ সব নিরাপত্তা বাহিনী নির্বাচনী পরিবেশ বজায় রাখতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করবে। মোট নয় লাখের মতো সদস্য মাঠে থাকবেন, যা দেশের নির্বাচনী ইতিহাসে সর্বোচ্চ। নিরাপত্তা জোরদারের অংশ হিসেবে দেড় লাখ পুলিশ সদস্যকে বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।
